৯ই আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৪শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার, রাত ৯:০১

দেওভোগে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে ব্যবসা

প্রাইমনারায়ণগঞ্জ.কম

নগরীর ১৬ নং ওয়ার্ডের দেওভোগ এলাকায় হাকিম মার্কেট নামে পুরাতন ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের নীচতলায় প্রায় ৮০টি দোকানে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই চলছে বেচা-কেনা। ভবনটি এতোটাই ঝুঁকিপূর্ণ যে, ইতিমধ্যেই ভবনটির ২য়, ৩য়, ৪র্থ ও ৫ম তলার ভাড়াটিয়াদের অন্যত্র সরানো হয়েছে। ভবনের প্রথম তলার ছাদ ভেঙ্গেছে অনেক আগেই, বর্তমানে ছাদের পরিবর্তে টিন দিয়ে বৃষ্টির পানি আটকানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

ইতিমধ্যেই ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হিসাবে চিহ্নিত করে এটি ভেঙ্গে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন ও ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্স। যেকোন মুহুর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে ভবনটিতে। এ নিয়ে দোকান মালিক ও এলাকাবাসীর মধ্যে উতকণ্ঠা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।  

সরেজমিনে দেখা গেছে, ভবনের নীচ তলার ছাদ ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে ছাদের স্থলে টিন দেয়া হয়েছে। ভবনের ভেতরে-বাইরে শ্যাওলা জমে স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশ এবং ছাদ চুয়ে বৃষ্টির পানি পড়ছে। বিদ্যুতের তারগুলো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। কাজের কোনো পরিবেশ নেই। ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ ও ব্যবহারের অনুপযোগী হওয়ায় গত প্রায় বছর খানেক আগে থেকেই উপর তালা গুলোর ভাড়াটিয়াদেরকে অন্যত্র সরানো হয়। ফলে উপর তালাগুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দোকান মালিক জানান, ভবনটি বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। ইতিমধ্যেই সিটি কর্পোরেশন ও ফায়ার সার্ভিস এটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে ভেঙ্গে ফেলতে নির্দেশ দিয়েছে। ভবন মালিকদের একাধিকার জানানো হয়েছে। মালিকপক্ষ সংখ্যায় বেশী হওয়ায় তাদের নিজেদের মধ্যে সমন্বয়হীণতার কারণে ভবনটি ভেঙ্গে ফেলার বিষয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। ফলে আমরা চরম আতঙ্ক নিয়ে এখানে ব্যবসা করছি।

মার্কেটটির দোকান মালিক সমিতির সভাপতির দায়িত্বে থাকা নিলু মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রাইম নারায়ণগঞ্জকে জানান, আমরা ইতিমধ্যেই মালিকপক্ষের সাথে কয়েকদফা বৈঠক করেছি। দোকান মালিকদের পক্ষ থেকে আমরা ইতিমধ্যেই একটি আহবায়ক কমিটি করেছি যার প্রধান আহবায়ক হচ্ছেন ১৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি মনা সরদার সাহেব। আহবায়ক কমিটির সদস্যদের নিয়ে মালিকপক্ষের সাথে বসে শেষ বৈঠকের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ঈদের পরেই ভবনটি ভাঙ্গা হবে।কিন্তু এ সময়ের মধ্যে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে এর দায়-দায়িত্ব কে নিবে এমন প্রশ্নে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারে নি।

মালিকপক্ষের ৬ জনের মধ্যে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক আহসান হাবিবের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আসলে আমি একা মালিক পক্ষ না। মালিক আরো ৫ জন এবং তাদের অনেকেই মারা গেছেন। তাই উত্তরাধিকার সুত্রে মালিক সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় কিছুটা বিলম্ব হয়েছিলো ভবনটি সম্পর্কে সিদ্ধান্তে পৌছতে। তবে রোজার ঈদের পরেই ভবনটি ভাঙ্গার কথা ছিলো কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে ভাঙ্গা সম্ভব হয় নি, দোকানদাররা কিছুটা সময় চেয়েছে। তবে কোরবানীর ঈদের পরে অবশ্যই ভাঙ্গা হবে।

কিন্তু এ সময়ের মধ্যে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে এর দায়-দায়িত্ব কে নিবে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, দুর্ঘটনায় তো আর কারো হাত নেই। তবে আল্লাহর উপর ভরসা রাখছি। আল্লাহ যদি চায় স্বল্প এ সময়টুকু ভালোভাবেই পার করতে পারবো।

বাছাইকৃত সংবাদ

No posts found.